মাতৃভাষা বাংলায় ট্রিপল ই ইঞ্জিনিয়ারিং
Search
Close this search box.

ট্রান্সফরমার (Transformer)

ট্রান্সফর্মার এমন একটি স্ট্যাটিক ডিভাইস যা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশনের মাধ্যমে কাজ করে। এটি ফ্রিকোয়েন্সি এবং পাওয়ার ঠিক রেখে এক সার্কিট থেকে অন্য সার্কিটে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার ট্রান্সফার করে। ট্রান্সফর্মারে মিউচুয়াল ইন্ডাকট্যান্সের মাধ্যমে এক সার্কিট থেকে অন্য সার্কিট অর্থাৎ প্রাইমারি ওয়ান্ডিং থেকে সেকেন্ডারি ওয়ান্ডিং এ পাওয়ার ট্রান্সফার হয়।

ট্রান্সফর্মারের সাহায্যে ভোল্টেজ বেশি বা কম করা হয়। যে ট্রান্সফর্মারের সাহায্যে ভোল্টেজ কম করা হয় তাকে স্টেপ ডাউন এবং যে ট্রান্সফর্মারের সাহায্যে ভোল্টেজ বেশী করা হয় তাকে স্টেপ আপ ট্রান্সফর্মার বলে। স্টেপ আপ অথবা ডাউন দুই ধরনের ট্রান্সফর্মারেই ইনপুট এবং আউটপুট পাওয়ার সমান থাকে।

ট্রান্সফর্মারের গঠন:

প্রাইমারি ওয়ান্ডিং, সেকেন্ডারি ওয়ান্ডিং এবং ম্যাগনেটিক কোরের সমন্বয়ে ট্রান্সফর্মার গঠিত। স্টেপ ডাউন ট্রান্সফর্মারে প্রাইমারি ওয়ান্ডিংয়ে টার্ণ সংখ্যা বেশী এবং সেকেন্ডারীতে টার্ণ সংখ্যা কম থাকে। স্টেপ আপ ট্রান্সফর্মারে প্রাইমারি ওয়ান্ডিংয়ে টার্ণ সংখ্যা কম এবং সেকেন্ডারীতে টার্ণ সংখ্যা বেশি থাকে।

ট্রান্সফর্মার
ট্রান্সফর্মার

প্রাইমারি ওয়ান্ডিংয়ে এ.সি. সাপ্লাই দেয়া হয় এবং সেকেন্ডারি থেকে আউটপুট সাপ্লাই নেয়া হয়।

যেভাবে কাজ করে:

ট্রান্সফর্মারের প্রাইমারি ওয়ান্ডিংয়ে যখন ভোল্টেজ প্রদান করা হয়, এর মধ্যদিয়ে কারেন্ট প্রবাহের ফলে ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স তৈরি হয়। এই ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স কোরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে ট্রান্সফর্মারের সেকেন্ডারি ওয়ান্ডিংয়ে আবিষ্ট হয়।

সেকেন্ডারি ওয়ান্ডিংয়ে এই ফ্লাক্সের কারণে কারেন্ট প্রবাহিত হয় এবং ভোল্টেজ উৎপন্ন হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, দুই ওয়ান্ডিং এবং কোরের মধ্যে কোন ইলেকট্রিক্যাল সংযোগ থাকে না।

ট্রান্সফর্মারে সূত্র:

ট্রান্সফর্মারে আবিষ্ট ই.এম.এফ.
$$\phi=\phi_m\sin (\omega t)$$ ফ্যারাডের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশন সূত্র অনুসারে ফ্লাক্স লিংকেজ
$$\begin{align*} e&=-\frac{d}{dt}(\phi t)\\ &=-T\frac{d}{dt}\phi\\ &=-T\frac{d}{dt}(\phi_m \sin\omega t)\\ & =-T\omega\phi_m\cos\omega t\\ & =-T\omega\frac{d}{dt}\phi_m(\omega t-\frac{\pi}{2} ) \\ \therefore e&=E_m\sin(\omega t-\frac{\pi}{2}) \end{align*}$$ এখানে,\( E_m= 4.44\omega \phi_m\)

প্রাইমারি ই.এম.এফ. $$ E_1=4.44\phi_m fT_1 $$ এবং সেকেন্ডারি ই.এম.এফ. $$ E_2=4.44\phi_m fT_2 $$ এখানে,
Φ= ফ্লাক্সের সর্বোচ্চ মান
f = ফ্রিকোয়েন্সী
E = ভোল্ট

যদি,
Bm = সর্বোচ্চ ফ্লাক্স ডেনসিটি
A= ক্ষেত্রফল হয়,
$$ B_m =\frac{\phi_m}{A} $$
যদি,
E1= প্রাইমারির ভোল্টেজ
E2=সেকেন্ডারির ভোল্টেজ
T1= প্রাইমারির টার্ণ
T2= সেকেন্ডারির টার্ণ হয়, $$ \begin{align*} \frac{E_1}{T_1}&=4.44\phi_mf\\ \frac{E_2}{T_2}&=4.44\phi_mf\\ \end{align*} $$ এখানে,\( \frac{E}{T}\) প্রতি টার্ণের ভোল্টেজ।
যেহেতু প্রতি টার্ণের ভোল্টেজ প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারীতে সমান, তাই
$$\frac{E_1}{E_2} = \frac{T_1}{T_2} =\frac{I_2}{I_1} =a $$ প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারির টার্ণ অথবা ভোল্টেজের অনুপাতকে ট্রান্সফর্মেশন রেশিও অথবা ভোল্টেজ রেশিও বলে। $$\frac{V_1}{V_2} = \frac{T_1}{T_2} =\frac{I_2}{I_1} =a $$

 

বৈদ্যুতিক গ্রিডে ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশন লাইনে, পাওয়ার সাপ্লাই সার্কিটে ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করা হয়।

ট্রান্সফর্মারের প্রকারভেদ:

কার্যপ্রণালীর উপর ভিত্তি করে:

  • স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার
  • স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার

ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে:

  • পাওয়ার ট্রান্সফরমার
  • ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার
  • অটো ট্রান্সফরমার
  • ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার
    • কারেন্ট ট্রান্সফরমার
    • পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার

স্থাপন এর উপর ভিত্তি করে:

  • ইনডোর টাইপ ট্রান্সফরমার
  • আউটডোর টাইপ ট্রান্সফরমার
  • আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রান্সফরমার
  • পোল মাউন্টেড ট্রান্সফরমার

ফেজের সংখ্যা অনুসারে:

  • সিঙ্গেল ফেজ ট্রান্সফরমার
  • পলি ফেজ ট্রান্সফরমার

ফ্রিকোয়েন্সি অনুসারে:

  • রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সফরমার
  • অডিও ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সফরমার

বিভিন্ন প্রকার ট্রান্সফর্মারের সিম্বল:

সাধারণ ট্রান্সফরমারসাধারণ ট্রান্সফরমার
সেন্টার ট্যাপ ট্রান্সফরমারসেন্টার ট্যাপ ট্রান্সফরমার

আপনি আরো পড়তে পারেন

লাইট বাল্ব পরিভাষা

লাইট বাল্বের প্যাকেটের গায়ে বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইনফরমেশন দেয়া থাকে। আমরা অনেকেই এসব ইনফরমেশনের সঠিক অর্থ জানিনা। আসুন জেনে নিই এসব ইনফরমেশন দ্বারা কি বুঝায়। টেকনিক্যাল